হোটেলে ঢুকতেই ওয়েটার ভদ্রভাবে জিজ্ঞেস করলো, মামা কি খাবেন? গরু, মুরগি, খাসি, ইলিশ, রুই, চিংড়ি, কোনটা খাবেন বলেন? মুচকি হেসে উত্তর দিলাম, মামা ডিম নাই?
ওয়েটার বললো, আছে। রান্না করা ডিম আর কয়েক প্লেট ভাজি এনে সামনে রাখলো। বললাম, মামা শুধু ডিম হলেই চলবে। ভাজি গুলো লাগবে না, এগুলো নিয়ে যান।
দেড় প্লেট ভাত নেওয়ার পর যখন আরো হাফ প্লেট ভাত নিয়ে ওয়েটারের কাছে ঝোল চাইলাম,ওয়েটার চড়া গলায় জবাব দিলো, ঝোল নাই, ১৫ টাকার ডিম নিয়ে ২০টাকার ঝোল চাইলে তো হবে না। বাটিতে পাতলা ডাল রাখা আছে, ডাল দিয়ে খান।
ওয়েটারের এমন কথার জবাব আমার জানা নেই। চুপচাপ খেয়ে বেড়িয়ে গেলাম। কারন আমার টাকায় লেগে আছে বাবার বুকের ঘামের গন্ধ, গৃহিণী মায়ের বেদনা,আছে হাজারো স্বপ্ন। তাই মন চাইলেও আর খাওয়া সম্ভব না।
আজ বাবাও হয়তো বাজার থেকে অল্প কয়েক টাকার ছোট মাছ কিনে এনে মাকে বলতেছে, তুমি দেখো একদিন আমাদের দিনকাল এরকম থাকবে না, তোমাকেও দুই কাপড়ে বছর পার করতে হবে না। ছেলে আমাদের একদিন অনেক ভালো চাকরী করবে।
গল্পটা আমার মতো হাজারো মধ্যবিত্ত ছেলের | ৬০ টাকা দামের চটি পায়ে দেওয়া ছেলেগুলোই হয়তো একদিন দেশের মাথা হবে। এরা পারে না গার্লফ্রেন্ডকে দামী গিফট উপহার দিতে,হোটেলে বসে পোলাও খেতে, পারেনা বাইক নিয়ে শা শা করে ঘুরে বেড়াতে। “এরা পারে ঝোল ছাড়া ভাত খেয়েও মা-বাবার স্বপ্ন পুরণ করার জন্য নির্ঘুম রাত কাটিয়ে বিজয়ের পতাকা ছিনিয়ে আনতে”।